অভিশপ্ত কঙ্কাল হ্রদ।

অভিশপ্ত কঙ্কাল হ্রদ।


ভারতের উত্তরাখণ্ডে পাঁচ হাজার ২২৯ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত একটি হ্রদ রূপকুণ্ড। পানি জমে বরফ হয়ে যাওয়ায় শীতের সময় স্কেটিং করার এক আদর্শ জায়গা এটি।তবে শীত শেষে জমাট বরফ গলে গেলেই শুরু হয় আজব এক ঘটনার। হ্রদের তলদেশজুড়ে দেখা যায় শত শত কঙ্কাল। পুরো হ্রদেই ভাসতে থাকে মানবদেহের হাড়গোড়।একজন বনরক্ষী ১৯৪২ সালে প্রথম আবিষ্কার করেন কঙ্কালের হ্রদটি। একটি কঙ্কালের ওপর হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার পরই তিনি দেখতে পান, কঙ্কালে ভর্তি এই হ্রদটি। ছোট্ট হ্রদটিতে তখন ভাসছিল শত শত হাড়গোড়। এই এলাকার খারাপ আবহাওয়ার কারণে আজ পর্যন্ত অনেক মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু রহস্য তৈরি হয় হ্রদের এই কঙ্কালগুলো নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এলাকাটিতে প্রবেশ করে জাপানি সৈন্যরা।যুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তাদের। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, কঙ্কালগুলো ওই জাপানি সৈনিকদের। তবে ফরেনসিক পরীক্ষার পর জানা যায়, হ্রদের কঙ্কালগুলো আরো অনেক পুরনো।কথিত আছে, ১৮৪১ সালে কাশ্মীরের জেনারেল যাওয়ার সিংয়ের নেতৃত্বে সেনাদের একটি দল তিব্বতের যুদ্ধ শেষে ফিরে যাওয়ার পথে হিমালয়ে রাস্তা হারিয়ে ফেলেন। মৃত্যু হয় তাদের সবার। কিন্তু গবেষণায় নিশ্চিত হয়, কঙ্কালগুলো তাদেরও নয়।তবে স্থানীয়রা বলে কনাউজের রাজা যশধাওয়ালের কথা। কথিত আছে, মধ্যযুগে হিমালয়ের পাহাড়ে তিনি মহা ধুমধামে একটি উৎসবের আয়োজন করেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, হিমালয়ের দেবতা 'লাতু' সেদিন হয়তো খারাপ মেজাজে ছিলেন। তাঁর ঘুম ভাঙানোর অপরাধে নামিয়ে আনেন তুমুল শিলাবৃষ্টি। এই বৃষ্টিতেই মৃত্যু হয় রাজার। রেহাই পাননি তাঁর সঙ্গীরাও। এদিকে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সেখানে প্রায় ছয় শর বেশি মাথার খুলি আছে। প্রতিটি খুলিতেই আছে আঘাতের চিহ্ন। তাঁদের ধারণা, দেবতা 'লাতু'র অভিশাপের কথা সত্যি হোক না হোক-বড় বড় শিলার আঘাতে হতভাগ্য এই লোকগুলোর মৃত্যু হতেই পারে। কঙ্কালগুলো প্রায় ৮৫০ বছরের পুরনো। রূপকুণ্ড হ্রদের অনেক কঙ্কালই চুরি গেছে। চোরের তালিকায় আছে পর্যটক এবং কৌতূহলী গবেষকরা।

কোন মন্তব্য নেই

Goldmund থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.