ফেসবুকে ফিশিং এবং স্ক্যাম এড়াতে আপনার করণীয় বিস্তারিত এই পোস্টে।

ফেসবুকে ফিশিং এবং স্ক্যাম এড়াতে আপনার করণীয় বিস্তারিত এই পোস্টে। 

সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের একটি লক্ষ্য হলো, ফেসবুক মানুষকে সেই ক্ষমতা দান করবে, যার মাধ্যমে মানুষ কিছু তথ্য বিনিময় করে বন্ধু বা পরিবার-প্রিয়জনের সঙ্গে অর্থবহ যোগাযোগ গড়ে তুলবে। একই সঙ্গে ফেসবুক ব্যবহার করে পছন্দনীয় আঞ্চলিক ব্যবসায়ে সমর্থন দিতে পারবে। পাশাপাশি নিজেদের আসক্তি, অভিজ্ঞতা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর ওপর ভিত্তি করে কমিউনিটিও গঠন করতে পারবে। সামান্য কিছু পদক্ষেপ নিয়ে ফেসবুকে ফিশিং এবং স্ক্যামের মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো এড়ানো যায়। সাইবার অপরাধের প্রাচীনতম রূপ ফিশিং ও স্ক্যাম এড়িয়ে চলার কিছু টিপস— ফিশিংকী? ফিশিং হলো যখন কোনো ব্যক্তি সন্দেহজনক মেসেজ কিংবা লিংক পাঠিয়ে কারো ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। ফিশিংয়ের বিভিন্ন রূপ হতে পারে। যেমন ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইল, পোস্ট, মেসেজ কিংবা ভুয়া ওয়েবসাইট। সাধারণত একজন ফিশার স্বনামধন্য কোম্পানির কোনো কর্মচারী হওয়ার দাবি করে কিংবা আপনার পরিচিত কোনো ব্যক্তি হওয়ার অভিনয় করে, যাতে তাকে আপনার পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ড নম্বর কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করেন। যদি তারা আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারে, তাহলে তারা আপনার অ্যাকাউন্টকে স্প্যাম পাঠানোর জন্য ব্যবহার করবে। ফিশিং থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যায়:- সন্দেহজনক ই-মেইল বা মেসেজ পাঠানো হলে কিংবা অ্যাকাউন্ট-সংক্রান্ত মেসেজ ফেসবুকের পক্ষ থেকে fb.com, facebook.com অথবা facebookmail.com থেকে প্রেরণ করা হয়। কাজেই ফেসবুক অ্যাপ কিংবা www.facebook.com ঠিকানায় প্রবেশ করে ফেসবুক থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ মেসেজগুলো দেখে নেয়া যায়। টাকা চেয়ে, উপহারের নাম করে কোনো মেসেজ কিংবা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করার হুমকিপুর্ণ মেসেজ বিশ্বাস করা যাবে না। লগইন-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। ফেসবুক কখনই কারো পাসওয়ার্ড সম্পর্কে জানতে চাইবে না এবং কখনই একজন ব্যবহারকারীকে অ্যাটাচমেন্ট হিসেবে আপনার পাসওয়ার্ড পাঠাবেন না। তাই লগইন-সংক্রান্ত তথ্য কখনই কারো কাছে প্রকাশ করবেন না। ফেসবুকে সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে চলতে হবে। ফেসবুক মেসেঞ্জারে সন্দেহজনক ই-মেইল কিংবা পোস্ট যেখানে দাবি করা হয়, ফেসবুক থেকে দেয়া হয়েছে এমন লিংকে ক্লিক করবেন না। এক্ষেত্রে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো লিংক ক্ষতিকর হয়, তাহলে ওই লিংক নাম কিংবা ইউআরএল লাল বর্ণে পেজের উপরে দেখা যাবে এবং তাতে লাল বর্ণের একটি ত্রিভুজ অঙ্কিত থাকবে। ফেসবুক পাসওয়ার্ড, সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর কিংবা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চেয়ে যদি কোনো ই-মেইল পাঠানো হয়, তাহলে তার উত্তর পাঠাবেন না। কোনো ই-মেইল কিংবা ফেসবুক মেসেজ সন্দেহজনক মনে হলে [email protected] ঠিকানায় রিপোর্ট করা যেতে পারে। কোনো কথোপকথন বিষয়ে রিপোর্ট করতে হলে তা ডিলিট করার আগে স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে হবে। যদিও অন্যপক্ষের ইনবক্স থেকে মেসেজগুলো ডিলিট হবে না। কোনো লিংকে রিপোর্ট করা হলো অবমাননাকর কনটেন্ট কিংবা স্পাম সম্পর্কে ফেসবুককে অবগত করার সর্বোত্তম পন্থা। রিপোর্ট লিংক কনটেন্টের খুব কাছাকাছি থাকে। অতিরিক্ত নিরাপত্তা ফিচারের ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য টু-প্যাক্টর-অথেন্টিফিকেশন ফিচার চালু করে রাখা যেতে পারে। এর ফলে কেউ আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবেশের চেষ্টা চালালে তা নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেবে ফেসবুক। স্ক্যামার কিংবা ফিশারদের হাত থেকে রক্ষা পেতে অতিরিক্ত সতর্ক বার্তার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। এতে আপনি কোনো ব্যক্তির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন কিনা, তা জানতে পারবেন। ফিশিংয়ের সবচেয়ে সাধারণ কৌশল হলো, মানুষের আবেগকে পুঁজি করে তাকে ভুল পথে পরিচালিত করা। স্ক্যামাররা এমন একজন হওয়ার ভান করে, যাকে আপনি চেনেন এবং তারপর তারা আপনার কাছে সাহায্য এবং অর্থ চাইবে। তারা সাধারণত আপনার বন্ধু, আত্মীয়স্বজন কিংবা বিপদে পড়েছে এমন ব্যক্তির ছদ্মবেশ ধারণ করার অভিনয় করে। কিছু স্ক্যামার রোমান্টিক মেসেজ পাঠানোর মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টা করতে পারে। তারা এটি করে থাকে, যাতে তারা আপনাকে টাকা পাঠানোর ব্যাপারে রাজি করাতে পারে কিংবা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সহজে পেতে পারে। ফিশারদের আরো একটি কৌশল হলো, তারা এমন একটি মেসেজ পাঠাবে, যা পুরস্কার দাবি করার জন্য একটি পেজের ঠিকানায় প্রবেশ করতে বলবে। কিন্তু সমস্যা হলো, পুরস্কার দাবি করার জন্য একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীকে মেম্বারশিপ নিতে হবে কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হবে। অন্যান্য ফিশিং মেসেজের মতো এসব ক্ষেত্রেও বানান ভুল কিংবা দুর্বল গ্র্যামার লক্ষ করা যায়। ভুলবশত ফিশার দ্বারা আক্রান্ত হলে নির্দেশনা গুলো অনুসরণ করুন:- বুঝতে পারছেন ফিশার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখনো নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারছেন। তাহলে দ্রত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে অন্য সব অপরিচিত ডিভাইস থেকে লগ আউট করে অ্যাকাউন্ট নিরাপদ করে নেয়া যাবে। ইউজার নাম কিংবা পাসওয়ার্ড কাজ না করলে এবং আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে না পারলে অ্যাকাউন্ট রিকভার টুলটি ব্যবহার করুন। অ্যাকাউন্টে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটেছে কিনা, সেটা ‘রিভিউ রিসেন্ট অ্যাক্টিভিটি’ এবং ই-মেইলে ফেসবুক থেকে পাঠানো মেসেজ চেক করে জেনে নেয়া যাবে। যদি মনে করেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তাহলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। যদি ক্রেডিট কার্ড-সংক্রান্ত তথ্য ভুলক্রমে তৃতীয় পক্ষের কাছে দিয়ে থাকেন, তাহলে ব্যাংক কিংবা ক্রেডিট কার্ডসংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং ফেসবুকে ওই অ্যাকাউন্ট কিংবা ব্যক্তির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে ভুলবেন না। অতিরিক্ত তথ্য জানার জন্য ভিজিট করুন— https://www.facebook.com/help/

কোন মন্তব্য নেই

Goldmund থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.