এলিয়েন (ভিনগ্রহের প্রাণী) সম্পর্কে আল-কুরআনের ভাষ্য!

এলিয়েন (ভিনগ্রহের প্রাণী) সম্পর্কে আল-কুরআনের ভাষ্য!



এলিয়েন (ভিনগ্রহের প্রাণী) সম্পর্কে বিজ্ঞান থেকে আল-কুরআনের ধারনা অনেক বেশি সুস্পষ্ট। বিজ্ঞান যেখানে দ্বিধাদ্বন্দে কিন্তু আল-কুরআন সেখানে দিচ্ছে ১০০% নিশ্চয়তা। যেই দিন-ই আমরা এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারব, সেই দিন হয়তো দলে দলে মানুষ ইসলামের ছায়াতলে এসে আশ্রয় গ্রহণ করবে!                                     

খ্রীষ্টপূর্ব পাঁচ শতকে থেলাস সর্বপ্রথম ভিনগ্রহের প্রাণীর ধারনা পোষন করেন। তার ধারনা মতে “দৃশ্যমান গ্রহ ব্যবস্থা ছাড়াও অন্য কোন জীবন বহুল জগত রয়েছে”। পুটার্চ তার ধারণায় চাঁদে স্বর্গের অসুরদের আবাস ভূমিকে খুঁজে পেয়েছিলেন। অনুরূপভাবে মধ্যযুগের জ্যোতির্বিদগণও পৃথিবীর বাইরে অন্যান্য গ্রহে জীবনের কল্পনায় শুধু করতেন না, তারা কল্পিত জগতগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনেরও নিরন্তর প্রয়াস ও ধ্যান ধারণার চিহ্ন রেখে গেছেন ইতিহাসের পাতায়। বিখ্যাত গণিতবিদ সি এফ গাউস সাইবেরীয় জঙ্গলের বৃক্ষরাজিতে একটি অতিকায় ত্রিকোণ তৈরীর প্রস্তাব করেছিলেন যা অন্যান্য গ্রহের অধিবাসিগণকে আকৃষ্ট করতে সমর্থ হবে। জে জে ভন লিট্রো সাহারা মরুভূমিতে জ্যামিতির পদ্ধতি অনুসারে সুবৃহৎ আকৃতির  নালা তৈরী করে তাতে কেরোসিন ঢেলে রাতের বেলায় আগুন ধরিয়ে দেয়ার প্রস্তাব রাখেন। সি গ্রস দিনের সূর্যালোকে অতিকায় আয়না স্থাপন করে আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে ভিন গ্রহের মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পরামর্শ পর্যন্ত দান করেছিলেন। এই তো গেল প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় দার্শনিকদের প্রচেষ্টা। আর আধুনিক যুগে ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধানে পৃথিবীতে এবং পৃথিবী থেকে পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন অভিযান। পৃথিবীর অভিযানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সেটি (SETI:Search for Extraterrestrial Intelligence), যা ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক। 'সেটি' বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধান করে পৃথিবী থেকেই। বর্তমানে ১০টিরও বেশি দেশে 'সেটি' এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্পর্কে আংকিক কিংবা যৌক্তিক কিংবা বিশ্বাসগত এই বিপুল সমর্থনের কারণেই গবেষকরা খুঁজে চলেছেন প্রাণের অস্তিত্ব। এই সন্ধান-কার্যক্রমে গবেষকরা একদিকে অতীতের ঐতিহাসিক উৎসে খোঁজ করছেন ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্ব আর বিজ্ঞানীরা খোঁজ করছেন পৃথিবীর বাইরের গ্রহ কিংবা উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব।
শুধু বিজ্ঞানিক ও দার্শনিক নয় গণমাধ্যমও রেখে যাচ্ছেন এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা- ভিনগ্রহের প্রাণীদের সম্পর্কে গণমাধ্যমে বহু চটকদার এবং কখনও কখনও ভাবগম্ভির কাজও হয়েছে। যেমন লেখা হয়েছে বই, প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকার প্রতিবেদন, তেমনি তৈরি হয়েছে গান, চলচ্চিত্র এবং এ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র। যা নতুন করে বলার কোন অবকাশ রাখেনা, কারণ এগুলো সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি।
এবার আমরা আল-কুরআনের দিকে দৃষ্টি দেয়-
“মহান আল্লাহই জগতসমূহের প্রতিপালক। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা”
(৪০:৬৪-৬৫)।
“জগতসমূহের প্রতিপালক আবার কি? তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীসমূহ এবং উহাদিগের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও”
(২৬:২৩-২৪)।
“তাঁর এক নিদর্শন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যেসব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন”
(৪২:২৯)।
“আল্লাহ হইতেছেন তিনি, যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন অসংখ্য আকাশ আর অনুরূপ সংখ্যক পৃথিবী। উহাদের উপরও আল্লাহর নির্দেশ অবতীর্ণ হয়; (এ তথ্যটি) এই জন্য যে তোমরা যেন অবগত হও, আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও সর্বাজ্ঞ”
(৬৫:১২)।
আল-কুরআনের আরো অনেক আয়াতে ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে যে- শুধু আমাদের এই পৃথিবীই নয়, অন্য কোন অজানা প্রান্তেও রয়েছে আল্লাহর সৃষ্টি জীব। কিন্তু এর বিপরীতে মহাবিশ্বের কোথাও প্রাণ নেই এরকম কোন বার্তা আল-কুরআনে দেয়নি। আর ৪২ নং সূরার ২৯ নং আয়াত এবং ৬৫ নং সূরার ১২ নং আয়াত ২টি আমাদের কে ১০০% নিশ্চিয়তা প্রদান করে ভিন গ্রহের প্রাণী সম্পর্কে এবং  ৬৫ নং সূরার ১২ নং আয়াতটি আমাদেরকে যে ধারনা দান করে তাহল- “ভিন গ্রহের প্রাণীরা আমাদের মতই বুদ্ধিমান এবং গঠন গত দিক থেকে আমাদের মতই (হতে পারে আমাদের থকেও বেশি) উন্নত । কারণ তাদের উপর যেহেতু আল্লাহর নির্দেশ অবতীর্ণ হয়, তারা অবশ্যই বুদ্ধিমান হতে হবে। তাদের থাকবে জ্ঞান, থাকবে পড়ার ও লিখার ক্ষমতা। যদি পড়ার ও লিখার ক্ষমতা থাকে, তহলে তাদের মস্তিষ্ক হতে হবে বড় এবং থাকতে হবে নূন্যতম আমাদের হাতের মত গঠন, যা কলম ধরতে সহায়ক। কিন্তু এলিয়েনের গঠনগত বিজ্ঞানের ধারনা গুলো আনেক বৈচিত্র পূর্ণ, যা শুধু কল্পনা মাত্র।

1 টি মন্তব্য:

Goldmund থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.