ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়েছে? কিভাবে রিকভার করবেন? হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি রিকভার এর তিনটি উপায়।


হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি রিকভার এর ০৩টি উপায়।



ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়েছে?  কিভাবে রিকভার করবেন?ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়েছে। তাই আপনার হ্যাক হওয়া আইডিটা ফিরিয়ে আনার চেস্টা করছেন। অথবা আপনার ফেসবুক একাউন্টটি যেন কেউ হ্যাক করতে না পারে। সেজন্য কি কি করতে হবে, সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আজকের এই পোষ্টটি আপনার জন্যই।

বর্তমানে ইন্টারনেট জগতে মিলিয়ন মিলিয়ন ওয়েবসাইট আছে।এতো মিলিয়ন মিলিয়ন ওয়েবসাইট থাকার পরও পছন্দের প্রথম সারিতে  ”ফেসবুক” জায়গা করে নিয়েছে। এই ওয়েবসাইটি আমাদের দৈনন্দিন কাজের একটি বিরাট অংশ হয়ে দাড়িয়েছে ।মেসেজিং / ভিডিও কলিং/ অডিও কলিং /তথ্য আদান-প্রদান থেকে শুরু করে ব্যবসা-বানিজ্যের প্রচারের কাজেও এখন অনেকেই ফেসবুককে ব্যবহার করে। কিন্তু এই আরাম প্রিয় বস্তুটি বেদনার কারন হয়ে দাড়ায় তখন, যখন কারও শখের ফেসবুক আইডিটা হ্যাক হয়ে যায়।
তাই আজকে আমরা জানবো, কিভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়? কিভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচাবেন? ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার পর করনীয় কি? কিভাবে ফেসবুক আইডি ফিরিয়ে আনবেন? ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিভাবে রিকভার করবেন?
কিভাবে ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়?
ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার অনেকগুলো কারন আছে। তবে তার মধ্যে বহুল আলোচিত কারন হলো, আমাদের অসাবধানতা। যদি আমরা একটু সাবধানতা অবলম্বন করি। তাহলেই আমাদের ফেসবুক আইডিটা হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।তবে আইডি হ্যাক হওয়ার আরও বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য কারন আছে। যেমন,
লগইন মাল্টিপল ডিভাইস
একটা ফেসবুক একাউন্ট থাকলেই আপনি যেকোনো সময়,যেকোনো ডিভাইস থেকে লগইন করতে পারবেন। ফেসবুক কমিউনিটি এই সুবিধাটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তাই প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে আমরা অন্যের মোবাইল/ল্যাপটপ দিয়ে নিজের আইডিটা লগ ইন করি। কিন্তু সমস্যা হলো অন্যের ডিভাইসে ফেসবুক চালানোর পরে লগ আউট করতে ভুলে যাই।আর সমস্যার শুরুটা এখানেই। কারন আপনি যার ডিভাইস থেকে লগ ইন করছেন। সেই ব্যক্তি আপনার ফেসবুক একাউন্টের সম্পূর্ন এক্সেস পেয়ে যাবে।ভআপনি না চাইলেও সেই ব্যক্তি আপনার ফেসবুক একাউন্টে যা খুশি করতে পারবে।
অপরিচিত লিংকে ক্লিক করা
ফেসবুক আইডি হ্যাক করার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো, লিংকে ক্লিক করিয়ে আইডি হ্যাক করা।আমরা যখন ফেসবুক ব্যবহার করি তখন নিউজফিডে বিভিন্ন প্রকার লিংক দেখতে পাই।আপনি জানলে অবাক হবেন যে, এই লিংকগুলোর মধ্যে কিছু কিছু লিংক আছে যেগুলোতে আপনি ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার ফেসবুকের ইমেইল ও পাসওয়ার্ড হ্যাকারদের হাতে চলে যাবে।
এখন প্রশ্ন হলো, হাজার হাজার লিংকের মধ্যে কোনটা হ্যাকিং লিংক আর কোনটা ভালো লিংক তা বুঝবো কিভাবে? এটা বোঝার অনেকগুলো পদ্ধতি আছে,যেমন উক্ত লিংকের শুরুতে  https:// আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে বুঝবেন সেই লিংকে ক্লিক করলে সমস্যা হবে না। কোনো লিংকের শেষে যদি (.htomail বা .index) এমন শব্দ থাকে।তাহলে বুঝে ‍নিবেন এই লিংকটি সুবিধার না। যদি লিংকের শেষে (.com/.net/.info/.xyz) এই টাইপের ডোমেইন থাকে।তাহলে বুঝে নিবেন সেই লিংকে ক্লিক করলে সমস্যা হবে না। কোনো লিংকে ক্লিক করলে যদি আপনার Facebook Password কিংবা হুবুহু ফেসবুকের Log in পেজের মতো একটি পেজ আসে। তাহলে ভুলেও সেই পেজে লগ ইন করবেন না। ফিশিং হ্যাক সাইটগুলোর লিংক কিছুটা এমন হয়,(http://ishanto.me/facebook/index.php?ds_n=MTI1 ) আপনি ভুলেও এই লিংকগুলোতে ক্লিক করবেন না। হ্যাকার যদি আপনার আইডিকে হ্যাক করার জন্য টার্গেট করে।তাহলে সেই লিংকগুলোর সাথে কিছু লোভনীয় কথা লিখে আপনাকে মেসেজ করবে, যেমন, "পরীমনি গোপন ভিডিও ফাঁস" দেখতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। আপনি যদি সেই লোভে সেই লিংকগুলোতে ক্লিক করেন। তাহলে আপনি জানতেও পারবেন না যে,কিভাবে আপনার আইডিটা হ্যাক হলো।
বিভিন্ন অ্যাপস কে পারমিশন দেয়া
অনলাইন কোনো গেম বা এপস ইনষ্টল করার সময় তারা আপনার ইনফরমেশন জানতে চায়। আমরা সেগুলো ভালোভাবে না পড়ে শুধু ওকে ক্লিক করতে করতে ইনষ্টল করি। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন, এই যে আপনি না দেখে সেই অ্যাপসকে পারমিশন দিচ্ছেন। এতে করে তারা আপনার অজান্তেই সব গোপন তথ্যগুলো লুটে নিচ্ছে। এরপর শুধু ফেসবুক নয়, ওরা ইচ্ছে করলে আপনার পুরো মোবাইল ডিভাইসটিকেও কন্ট্রোল করতে পারবে।
কি লগার
”কি লগার”- হয়তবা নাম শুনেই এর কাজ সম্পর্কে অনুমান করতে পেরেছেন। হ্যাকার কিংবা আপনার কাছের কোনো ফেসবুক ফ্রেন্ড আপনার ইনবক্সে একটি লিংক দিবে। আপনি যদি সেই লিংকে ক্লিক করেন। তাহলে অটোমেটিক আপনার ফোন / কম্পিউটারে একটি সফটওয়্যার ইনষ্টল হবে।তারপর আপনি আপনার ফোনে যা কিছু করেন না কেন। আপনার সব তথ্যগুলো এই সফটওয়্যারটি নিজে থেকেই হ্যাকারের কাছে পাঠিয়ে দিবে।
💡Pro Tips: ফেসবুক আইডি হ্যাক করার জন্য এই পদ্ধতিগুলো খুব সহজ এবং অনেক জনপ্রিয়।তবে আপনার মাঝে সাবধানতা থাকলে এ হ্যাকিং পদ্ধতিগুলোতে কোনো কাজে আসবে না।
কিভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়। আশা করি সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। চলুন এবার আলোচনা করি, আইডিকে হ্যাকিং থেকে কিভাবে রক্ষা করবেন।
কিভাবে ফেসবুক আইডিকে হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচাবেন?
এমন অনেক বিষয় আছে, যেগুলো বিষয়গুলো আপনার মেনে চলা উচিত। তাহলে কেউ চাইলেও আপনার ক্ষতি করতে পারবে না।
পাসওয়ার্ড
শুধু যে ফেসবুক একাউন্ট তা নয়,”পাসওয়ার্ড”- আমাদের সব ধরনের একাউন্টের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। তাই যেকোনো একাউন্টকে হ্যাক থেকে রক্ষা করার জন্য সঠিক পাসওয়ার্ড হবে আপনার মূল হাতিয়ার।
কঠিন পাসওয়ার্ড
পাসওয়ার্ড হিসেবে আমরা অনেকসময় নিজের মোবাইল নম্বর / জন্মসাল / নিজের নাম ব্যবহার করি।যেমন, (নেম/মোবাইল নম্বর/সাল) আপনি জানলে অবাক হবেন যে, হ্যাকাররা এই পাসওয়ার্ডগুলো খুব সহজেই শনাক্ত করতে পারে।
অনলাইনে পাসওয়ার্ড ম্যাচিং নামে অনেক প্রকার টুলস / সফটওয়্যার আছে । যে সফটওয়্যার গুলোর সাহায্য যাদের পাসওয়ার্ড দুর্বল। তাদের পাসওয়ার্ড গুলো খুব সহজেই ম্যাচ করানো যায়। তাই পাসওয়ার্ড দেয়ার সময় সবচেয়ে কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। পাসওয়ার্ড দেয়ার সময় নিজের নাম কিংবা মোবাইল নম্বর ব্যবহারের পাশাপাশি চিহ্ন ব্যবহার করবেন। নিচে কিছু কঠিন পাসওয়ার্ডের নমুনা দেয়া হলো, Bangladesh+@%123Hard++Pass##word@My@@Name66-%2344
পাসওয়ার্ডের ভিন্নতা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা প্রায় একই পাসওয়ার্ড সবখানেই ব্যবহার করে থাকি।যেমন, ফেসবুকে যে পাসওয়ার্ডটি ব্যবহার করি। সেই একই পাসওয়ার্ডটি জিমেইলেও ব্যবহার করি। অথবা সেম পাসওয়ার্ড অন্যান্য সোশ্যাল সাইটেও ব্যবহার করি।
যদি আপনিও এই কাজটি করে থাকেন, তাহলে আপনি অনেক বড় ভুল করছেন। কারন হ্যাকাররা যখন আপনার একটি একাউন্টকে হ্যাক করতে পারবে। তখন তারা আপনার অন্যান্য একাউন্ট গুলোকেও হ্যাক করার চেস্টা করবে। আর সব জায়গাতে যদি একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন।তাহলে তো আপনি হ্যাকারের কাজটাকে আরও সহজ করে দিলেন।
পাসওয়ার্ডের পরিবর্তন
যতোই কঠিন পাসওয়ার্ড দেন না কেন, চেষ্টা করবেন প্রতি ৬ মাস পরপর সেই পাসওয়ার্ডকে পরিবর্তন করার। তবে এত ঘনঘন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার ফলে তো ভুলে যেতে পারেন,তাইনা?
পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য অনলাইনে অনেক নোটপ্যাড পাবেন। যেগুলোতে আপনার ভুলে যাওয়া বিষয়গুলোকে সেই নোটপ্যাডে লিখে সেভ করে রাখতে পারবেন। যদি কোনো সময় আপনি সেই তথ্যগুলো ভুলে যান।তাহলে খুব সহজেই নোটপ্যাড ওপেন করে আবার মনে করতে পারবেন।
ফেসবুক সিকিউরিটি সেটিংস
ফেসবুক তাদের ব্যবহারকারীর একাউন্টের সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট অপশন দিয়েছে। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ সেগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেই না।আমরা ফেসবুক একাউন্ট খোলার পর থেকেই মেসেজিং করা শুরু করি।ভআর কিছু  গুরুত্বপূর্ন সেটিংস করতে ভুলে যাই। ফেসুবকের সুরক্ষার জন্য আপনাকে সেই অপশনগুলো চালু করে রাখা উচিত।যেমন,
লগ ইন এলার্ট
ফেসবুক লগইন এলার্টযদি আপনি চান যে, যখনি আপনার আইডিতে লগইন করবেন। তখনি ফেসবুক থেকে আপনার ফোনে কিংবা ইমেইলে একটা মেসেজ আসবে। তাহলে আপনি Get alerts about unrecognized logins নামের অপশনটি চালু করে রাখতে পারেন।
আপনি যখন এই অপশনটি চালু করে রাখবেন,তখন আপনার একাউন্টে অন্য কেউ লগ ইন করার সাথে সাথেই আপনার ফোন নম্বরে বা ইমেইলে একটি মেসেজ আসবে। এর ফলে আপনি বাদে অন্য কেউ আপনার আইডিতে ঢোকার চেষ্টা করার সাথে সাথেই আপনি তা জেনে যাবেন।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন
ফেসবুক টু স্টেপ ভেরিফিকেশন ফেসবুক আইডিকে সুরক্ষা দেয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন উপায় হলো, Two Factor Authentication চালু রাখা। যদি আপনি টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করে রাখেন। তাহলে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জানার পরও সে আপনার আইডিতে লগইন করতে পারবে না। কারন, সঠিক পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর, ফেসবুক আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কনফার্মেশন কোড পাঠাবে। সেই কোডটি ফেসবুককে দেয়ার পর আপনি আপনার আইডিতে ঢুকতে পারবেন।
💡Pro Tips: ফেসবুক আইডিকে হ্যাকিং থেকে বাঁচানোর জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী সেটিং হলো টু স্টেপ ভেরিফিকেশন।তাই আইডির সুরক্ষার জন্য প্রথমেই আপনাকে এই সেটিংসটি অন করে রাখতে হবে।
 লগইন লোকেশন এবং ট্রাষ্টেট কন্টেক্ট
ফেসবুক ট্রাস্টেট কন্টেক্ট দেখানো Choose 3 or 5 friends to contact if you get locked out অপশনটি হলো Trusted Contact. বিভিন্ন প্রকার সিকিউরিটি হেল্প পাওয়ার জন্য ফেসবুক এই অপশনটি চালু করেছে।ভএই অপশনটিতে ক্লিক করলে আপনাকে আপনার ফ্রেন্ডলিষ্ট থেকে ৩-৫ জন ফ্রেন্ডকে এড করতে বলবে।
এখানে আপনি তাদেরকে এড করবেন, যারা আপনার খুব কাছের লোক। কারন কোনো সময় আপনার ফেসবুক একাউন্টে লগইন করতে সমস্যা হলে। আপনি ফেসবুককে সেই ফ্রেন্ডদের ইনবক্সে একটা Confirmation Code  পাঠাতে পারবেন।আর সেই কোডটি দেয়ার পরে আপনি পুনরায় আপনার একাউন্টে লগইন করতে পারবেন।
লগইন লোকেশন
ফেসবুক লগইন লোকেশন আপনি কোন সময়, কোন কোন স্থান থেকে ফেসবুকে লগইন করছেন।তা দেখার জন্য ফেসবুক একটি লগইন অপশন চালু করেছে। এই অপশন থেকে আপনি খুব সহজেই দেখতে পারবেন আপনার আইডিটা কোন ডিভাইস থেকে কোন সময়ে, কোন স্থান থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে আপনার ফেসবুক একাউন্টটি কেউ গোপনে ব্যবহার করছে কিনা,তা সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পেয়ে যাবেন।
ফেসবুকের সকল তথ্য লুকিয়ে রাখা
আমরা যখন কোনো ফেসবুক আইডি ক্রিয়েট করি। তখন সবরকম তথ্য একাউন্টে দিয়ে থাকি। যেমন, কোন স্কুলে পড়াশোনা করছি, আমাদের জন্মসাল,আমাদের মোবাইল / ইমেল আইডি ইত্যাদি।কিন্তু আমরা এই তথ্যগুলো প্রাইভেসি হিসেবে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেই, যেন সবাই দেখতে পারে। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন যে, "ফেসবুক ক্লোনিং(Facebook Clone)" -নামের একটি হ্যাকিং পদ্ধতি চালু হয়েছে। যে পদ্ধতিতে যেকেউ আপনার সব তথ্যগুলোকে কপি করে নতুন একটি একাউন্ট তৈরি করে ফেসবুকের কাছে মেইল করে এবং বলে তার একাউন্টটি আসল আর আপনার একাউন্টটি নকল। হ্যাকাররা এই পদ্ধতিতে বেশিরভাগ সময় যেকারো একাউন্ট হ্যাক করতে সফল হয়। তাই আপনার একাউন্টে দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ন তথ্যাদি যেমন,(Date of Birth,Mobile Number,Email id) এগুলোকে Only Me করে হাইড করে রাখবেন। যেন কেউ আপনার একাউন্ট ক্লোন করতে না পারে।
এখন কথা হলো, এতকিছু করার পরেও যদি আপনার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হয়ে যায়। তখন কি করবেন? কিভাবে আপনার হ্যাক হওয়া আইডিকে ফিরিয়ে আনবেন? চলুন এবার সে সম্পর্কে জানা যাক।
ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে বুঝবো কিভাবে?
আপনার ফেসবুক আইডিটা আপনার অবর্তমানে কেউ হ্যাক করেছে কি না।তা বোঝার অনেকগুলো উপায় আছে।যেমন, আপনি ফেসবুকে না থাকলেও আপনাকে একটিভ দেখাবে। আপনার ফেসবুক বন্ধুদের অটোমেটিক মেসেজ যাবে। মেসেজে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করা হবে।ভআপনি কোথাও লাইক,চকমেন্ট না করলেও অটোমেটিক লাইক,চকমেন্ট চলে যাবে। আপনার টাইমলাইনে অটোমেটিক অশ্লীল পোষ্ট/ফটো আপলোড হবে। এমন অনেক কাজ আছে, যেগুলো আপনি না করলেও অটোমেটিক সেই কাজগুলো হতে থাকবে।যদি আপনার একাউন্টেও এমন কিছু হয়ে থাকে।তাহলে বুঝে নিবেন আপনার অজান্তে কেউ আপনার আইডিটা ব্যবহার করছে।
হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি ফিরিয়ে আনার উপায়
মোট ০৩ টি মেথডে হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি রিকোভার করা যায়। এই তিনটি মেথড আজকে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবো।
ফেসবুক হ্যাক আইডি রিকভার: মেথড (০১)
হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি রিকভার করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, মেথড ০১. যদি ছোট-খাটো হ্যাকাররা আপনার একাউন্ট হ্যাক করে।তাহলে মেথড-০১ ফলো করেই আপনার আইডি ফিরিয়ে আনতে পারবেন। আর যদি মেথড-০১ কাজ না করে, তাহলে পরবর্তী মেথডগুলো অনুসরন করবেন।
যখন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করবে
প্রায় বেশিরভাগ হ্যাকাররা একাউন্ট হ্যাক করার পর পুরাতন পাসওয়ার্ডটি পরিবর্তন করে নতুন পাসওয়ার্ড দেয়। তাই আপনাকে নিচের স্টেপগুলো অনুসরন করতে হবে। যখন হ্যাকার শুধু আপনার পাসওয়ার্ডটি পরিবর্তন করবে কিন্তু আপনার ইমেইলটি / মোবাইল নম্বর রিমুভ করবে না। তখন আপনি ফেসবুক Log in পেজে ”Forgot Password” অপশনটিতে ক্লিক করুন।তারপর ফেসবুক আপনার কাছে কিছু জানতে চাইবে যেমন, আপনার Username, Gmail Address অথবা Mobile Number., আপনি এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি অপশন সিলেক্ট করতে পারবেন। এরপর ফেসবুক আপনার ফেসবুক প্রোফাইলটি শো করবে। যদি আপনার একাউন্টটি শো করায় তাহলে Continue অপশনে ক্লিক করবেন। তারপর ফেসবুক আপনার ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া Gmail / Phone Number  রিকভারি কোড পাঠাবে। সেই কোডটি দেয়ার পর আপনাকে নতুন একটি পাসওয়ার্ড দিতে বলবে, আপনি আপনার ইচ্ছামতো একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে পুনরায় লগ ইন করতে পারবেন। যখন হ্যাকার আপনার আইডি হ্যাক করার পর আপনার দেয়া ইমেইলটিকে পরিবর্তন করে ফেলবে। তখন নিজের পদ্ধতি অনুসরন করবেন।
ইমেইল পরিবর্তন করলে
ফেসবুকের Log in পেজে গিয়ে Forgot Password সিলেক্ট করুন, আপনার Username বা Mobile Number দিয়ে আপনার প্রোফাইলকে খুজে নিন। প্রোফাইলকে খুজে পাওয়ার পর ”Reset Password” অপশনে ক্লিক করুন। তারপর একটু নিচে দেখতে পারবেন.”no longer have access to these” অপশনে ক্লিক করুন। এখন ফেসবুক আপনাকে কিছু সিকিউরিটি কোশ্চেন জিজ্ঞেস করবে। যেমন,আপনার জিমেইলে বয়স কত দেয়া আছে, কোন সালে জিমেইল খুলছিলেন ইত্যাদি। এই সিকিউিরিটি কোশ্চেনগুলোর সঠিক উওর দিতে পারলে আপনি আপনার আইডিকে রিকভার করতে পারবেন।
যদি ”ফেসবুক রিকভার:মেথড-০১” কাজ না করে। তাহলে আপনাকে ফেসবুকের নতুন আপডেট মেথডগুলো অনুসরন করতে হবে। আইডি রিকভারের জন্য ফেসবুক নতুন একটি সিকিউরিটি অপশন চালু করেছে।
ফেসবুক হ্যাক আইডি রিকভার:মেথড-(০২)
আপনি এমন ব্রাউজারটি ওপেন করুন, যে ব্রাউজারে আপনি প্রায় বেশিরভাগ সময় ফেসবুক ব্যবহার করেছিলেন। এবার চেস্টা করুন আপনার হ্যাক হওয়া আইডির "Password Reset" দেয়ার জন্য। ফেসবুক আপনার ব্রাউজারের Cookies/History  চেক করার পর আপনার Password Reset করার সুবিধা দিতে পারে। পুরাতন ব্রাউজার ব্যবহারের পাশাপাশি ঐ আইডিটা ব্যবহারের সময় যে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করছিলেন। সেই ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে ফেসবুকের কাছে একটি ট্রাষ্টেড সিগন্যাল পৌঁছাবে।
ফেসবুক হ্যাক আইডি রিকভার: ফাইনাল মেথড-(০৩)
ফেসবুক তাদের সর্বশেষ আপডেটে ”confirm your identity”-নামের নতুন একটি সিকিউরিটি অপশন চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে আপনি যদি সত্যিকারে আইডির মালিক হয়ে থাকেন। তাহলে ২-৩ দিনের মধ্যেই ফিরে পাবেন। প্রথমে এই লিংকে ক্লিক করুন: Click Here তারপর আপনি একটি ফাইল আপলোড করার বক্স পাবেন। এখানে আপনার আইডির নামের সাথে মিল থাকা ভোটার আইডি কার্ড / ভিসা /পাসপোর্ট স্ক্যান করে আপলোড দিন। তারপর ফেসবুক আপনার কাছ থেকে ২-৩ দিন রিভিউ করার জন্য সময় নিবে। যদি আপনার পাঠানো তথ্যগুলোর সাথে ফেসবুক প্রোফাইলের তথ্যগুলোর মিল থাকে। তাহলে আপনি আপনার হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি রিকভার করতে পারবেন।
সর্বশেষ কিছু কথা
আমরা সবাই কমবেশি ফেসবুকের প্রতি আসক্ত হয়ে গেছি। নিজেদের অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ার করি। তাই ফেসবুক একাউন্ট নিয়ে যথেস্ট সতর্ক থাকা উচিত। যেন আমাদের গোপন তথ্যগুলো কোনোভাবে ফাঁস হয়ে না যায়। আজকে আমি, কিভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়? কিভাবে হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচাবেন? হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি ফিরিয়ে আনার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। তবে অনেক সময় ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হলে, তা ফিরে পাওয়া অসম্ভব হয়ে দাড়ায়। যদি আপনার হ্যাক হওয়া সেই ফেসবুক একাউন্টে গুরুত্বপূর্ন কিছু থাকে। তাহলে দেরি না করে সাথে সাথে থানায় গিয়ে জিডি করে আসবেন। যেন আপনার একাউন্ট থেকে হ্যাকাররা কোনো অনৈতিক কাজ করলে।তার দ্বায়ভার আপনাকে না নিতে হয়। আজ এই পর্যন্তই। আর কোথাও কোন বিষয় বুঝতে অসুবিধা হলে আমাকে কমেন্ট করবেন, আমি সময় এবং সুযোগ মতো আপনাদেরকে সঠিক সমাধান দেওয়া চেষ্টা করবো।

৩টি মন্তব্য:

Goldmund থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.